বিএনপির মামলায় গ্রেপ্তার করা  সাবেক সিইসি নুরুল হুদা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি ৯ নম্বর সেক্টরে অংশগ্রহণ করেছিলেন। সিনিয়র এই ব্যক্তি ও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা যেভাবে দলীয় নেতাকর্মীদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন, তাতে দেশব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠেছে।

তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সাবেক সিইসি নুরুল হুদাকে ৯নং সেক্টরের সাব সেক্টর কমান্ডার হিসেবে যে পরিচয় দেওয়া হচ্ছে, যা সঠিক নয়। যিনি ৯নং সেক্টরের সাব সেক্টর কমান্ডার ছিলেন, তিনি হলেন ক্যপ্টেন নুরুল হুদা।

সাবেক সিইসি কে এম নুরুল হুদা ১৯৪৮ সালে বাংলাদেশের পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার নোয়ামালা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।  বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৩ সালের মুক্তিযোদ্ধা ব্যাচে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে যোগদান করার মধ্য দিয়ে তার কর্ম জীবন শুরু হয়। আর বাংলাদেশের ১২তম প্রধান নির্বাচন কমিশনার ( ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২) হিসেবে তার দ্বিতীয় দফার কর্মজীবন শেষ হয়।
 

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় “জনতার মঞ্চ” এ সংশ্লিষ্ঠতার অভিযোগে বিএনপি-জামাত জোট সরকার তাকে যুগ্ম-সচিব হিসেবে কর্মরত অবস্থায় ২০০১ সালে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায়। পরবর্তীতে সুপ্রিমকোর্টের এক রায়ে অন্যান্য কর্মকর্তাসহ নুরুল হুদা ভূতাপেক্ষা পদোন্নতি পেয়ে সচিব হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।

কে সেই সাব সেক্ট কমান্ডার নুরুল হুদা?

মুক্তিযুদ্ধের সময় দৌলতপ‍ুর-সাতক্ষীরা সড়ক থেকে খুলনার দক্ষিণাঞ্চল এবং সমগ্র বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলা নিয়ে ৯ নাম্বার সেক্টর গঠন করা হয় । ভারতের বসিরহাটের নিকটবর্তী টাকিতে ছিলো এই সেক্টরের হেড কোয়ার্টার। ৯নং সেক্টরের সাব সেক্টর ছিল তিনটি।  এরমধ্যে হিঙ্গলগঞ্জ সাব-সেক্টর এর কমান্ডার ছিলেন ক্যাপ্টেন নুরুল হুদা। বরিশাল শহরের বগুরা রোড (জীবনানন্দ দাশ সড়ক) এর পেশকার বাড়ী যার স্থায়ী ঠিকানা। বর্তমানে এই  নুরুল হুদা বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) এর সদস্য।

নুরুল হুদার জন্ম ২ নভেম্বর ১৯৪১। ২ জুলাই ১৯৬৬ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করে ৪র্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে নিয়োগ পান। সেনাবাহিনীতে চাকরী করেও রাজনীতিতে জড়িত থাকায় তাকে ১৯৬৯ সালে চাকুরী থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এই নুরুল হুদা  সেই সময়ের বরিশাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, এমএনএ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা  নুরুল ইসলাম মঞ্জুরের ভাই। তার আরেক ভাই রনাঙ্গণের পত্রিকা বিপ্লবী বাংলাদেশের সম্পাদক নুরুল আলম ফরিদ এর ছেলে প্রকৌশলী স্বাক্ষর জানিয়েছেন, স্বাধীনতার পরে বঙ্গবন্ধুর ডাকে নুরুল হুদা সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। পরে চাকুরী থেকে অব্যাহতি নেন। সেনাবাহিনীতে চাকুরী করার সুবাদে তিনি এখনও ক্যাপ্টেন নুরুল হুদা নামে পরিচিত।

সম্পাদনায় শাহীনা আজমীন